সকাল। দুবাইয়ের রোদ্দুর একদম ঝকঝকে। ক্যাম্পের লম্বা লম্বা খাটগুলোতে শ্রমিকেরা ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু আমার মন খোলা, কৌতূহল আর একদম হাসি ঠাট্টার মিশ্রণে ভর্তি।
আমি, কামাল, বাকি প্রবাসীদের সঙ্গে একেবারে অদ্ভুত এক সকাল কাটাচ্ছি। পাশের খাটে বসা ভাই সিফাত হঠাৎ চিৎকার করে বলল,
— “ভাই! আমার শার্টটা আবার কোথায় গেল?”
আমি ঘুমে ঘুমে বললাম,
— “তোর শার্টটা তো কাল রাতে খাটের নিচে কাদামাটি নিয়ে ছুঁয়ে গেছে। মনে হয় এখন ডার্টি কেঁচো হয়ে গেছে।”
সবাই হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। একদম পাশের খাটে মোশারফ ভাই খাটের কাঠে হেলাফেলা করে বসে বলল,
— “এখানে শার্ট খোঁজার চেয়ে খাটের কাঠে যাত্রা করতে বেশি মজা।”
সকালের নাস্তা হলে দেখি কেউ চা বানাচ্ছে, কেউ প্যানে ডিম ফাটাচ্ছে। কিন্তু ডিম ফাটানোই এক নতুন রকম ধাঁধা। হঠাৎ ডিম ফেটে গিয়ে খাটের উপর পড়ে গেল। মোশারফ চিৎকার করে বলল,
— “এই ডিম আমার ঘুম ভাঙলো না, আমাকে আক্রমণ করলো!”
আমি হেসে বললাম,
— “দোস্ত, মনে হয় এটাই প্রবাসে বেঁচে থাকার প্রথম পরীক্ষা— ডিমের আক্রমণ!”
কাজের জন্য বের হওয়া হলো এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। হেলমেট পরে আমরা কনস্ট্রাকশন সাইটে ঢুকলাম। সূর্যের তাপ, সিমেন্টের ধুলো আর ঢালাইয়ের শব্দ—সব মিলিয়ে মনে হলো, যেনো একেবারে লাইভ শো চলছে।
কিন্তু সবচেয়ে মজার বিষয় হলো—কাজের মাঝে সবাই নিজের রসিকতা দেখাচ্ছে। এক ভাই বলল,
— “দোস্ত, যদি এখানে কোনো ঘুমন্ত সাপ দেখা যায়, ওটাকে কি বোনের জন্য ছবি তুলতে পারি?”
সবাই হেসে উল্লাস করছে।
দুপুরে বিরতির সময় সবাই এক জায়গায় বসে চা খাচ্ছে। পাশে আমাদের হোটেলমুখী ভাই মোশারফ বলে উঠল,
— “এখানে চা মানেই এক্সট্রা সুইট। তবে তুই যত খাবে, ততোই গরমে ভিজে যাবে।”
আমি বললাম,
— “চা খাওয়া বন্ধ নেই, গরমের পানি নিয়ে কি সমস্যা?”
সবাই হেসে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।
রাতে ক্যাম্পে ফিরলে দেখি, সবাই ক্লান্ত হলেও হাসি থামছে না। এক ভাই গল্প করছে, আরেক ভাই রসিকতার সাপেক্ষে অদ্ভুত নাচ দেখাচ্ছে। আমি মাথা নেড়ে বললাম—
— “এটাই প্রবাসের প্রথম দিন। কঠিন, কিন্তু হাস্যকর!”
🔖 চলবে…