বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম, নাম মাদারপুর। গ্রামের লোকেরা মাছ ধরা, হাটে যাওয়া আর পুকুরের পানিতে ঝাঁপিয়ে খালি গা ভিজিয়ে রাখা ছাড়া আর কিছু বোঝে না। এই গ্রামে ঘটল এক অদ্ভুত কাণ্ড— এক ছেলে বউ শিকার করবে মাছ ধরার মতো করে!
শুরুটা কেমন
ছেলেটার নাম হলো করিম। করিমের বয়স প্রায় ৩০ ছুঁই ছুঁই, কিন্তু এখনও বিয়ে হয়নি। কারণ, মেয়েরা তাকে দেখলেই ভয় পেত। কেননা তার নাকটা এত লম্বা যে দূর থেকে কেউ সালাম করলে সে নাক দিয়েই হাত নেড়ে উত্তর দিতে পারত।
গ্রামের সবাই মজা করে ডাকত— “নাক-করিম”।
করিম একদিন খুব মন খারাপ করে বলল—
— “মাছও ধরি, জালও ফেলি, বড়শিও ফেলি, কিন্তু বউ কেন পাই না?”
তার বন্ধু মজনু উত্তর দিলো—
— “দেখ, তুই মাছ ধরতে জানিস, তাই তোর জন্য সমাধান আছে। তুই বউও ধরবি বড়শি দিয়ে।”
করিম প্রথমে অবাক হলেও পরে রাজি হলো।
কৌশল
পরদিন হাটে গেল মজনু আর করিম। মজনু তারে একটা বিশাল বড়শি দিলো, যেটা দিয়ে সাধারণত কাতলা মাছ ধরা হয়।
করিম জিজ্ঞেস করল—
— “এই বড়শি দিয়ে বউ ধরা যাবে?”
মজনু উত্তর দিলো—
— “বউ মানেই তো কাতলার মতো, অনেক নাচে, অনেক হাসে। একবার যদি ফাঁসলি, তাহলেই ফেঁসে যাবে।”
তারা বড়শিতে গেঁথে দিলো ফুচকা। গ্রামের মেয়েরা ফুচকার ভক্ত, তাই ভাবল, এটাই টোপ।
চমকপ্রদ ঘটনা
সন্ধ্যার পর গ্রামের মেয়েরা পুকুরপাড়ে ঘুরতে বের হলো। করিম ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে বড়শি ফেলল। টোপ দেখে এক মেয়ে এগিয়ে এসে বলল—
— “হায়রে! ফুচকা!”
আর হাত বাড়াতেই বড়শি ফেঁসে গেল ওড়নায়।
মেয়ে চিৎকার শুরু করল—
— “ওরে বাঁচাও! আমাকে মাছের মতো টানছে কে?”
গ্রামের লোকজন দৌড়ে এল। করিম লজ্জায় লাল হয়ে গেল। সবাই বলল—
— “দ্যাখ দ্যাখ, বউ শিকার করতে গিয়া মাইয়া ধরছে!”
গ্রাম আদালত
ঘটনাটা এত বড় আকার নিল যে পরদিন গ্রাম আদালত বসল। মাতব্বর এসে বলল—
— “করিম, বউ বড়শি দিয়ে ধরতে হয় নাকি?”
করিম মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল—
— “মাছের জন্য যদি কাজ করে, তবে বউর জন্যও কাজ করবে ভেবেছিলাম।”
সবাই হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল। শেষে সিদ্ধান্ত হলো, যাকে বড়শি দিয়ে ধরা হয়েছে, তাকেই করিমকে বিয়ে করতে হবে।
বিয়ের দিন
বিয়ের দিনে করিম বলল—
— “এই নাকটা দিয়াই আমি বউরে চুমু দেব।”
শুনেই গ্রামের লোকজন আবার হাসির দমকায় ভেঙে পড়ল।
এভাবেই করিম বড়শি দিয়ে বউ শিকার করে ইতিহাস সৃষ্টি করল।