আগের পর্বের ঝলক
কামাল প্রথম দিনেই বুঝেছে প্রবাস জীবন কঠিন। ডিম ভাঙার বিপদ, চা খাওয়ার হাসাহাসি আর কাজের ধকল তাকে ক্লান্ত করেছে।
নতুন কাহিনী
ভোরে ঘুম ভাঙলো হঠাৎ একটা অ্যালার্মের শব্দে। অ্যালার্মটা আসলে সিফাতের ফোন থেকে বাজছে, কিন্তু সিফাত ফোনটাকে বালিশের নিচে ঢুকিয়ে রেখেছে। কামাল চেঁচিয়ে উঠলো,
—“ভাই, অ্যালার্মটা কি বোমা নাকি? থামছে না কেন?”
সিফাত ঘুম জড়ানো কণ্ঠে বলল,
—“ভাই, এটা অ্যালার্ম না, এটা প্রবাসের কান্না।”
সবাই হেসে উঠল।
সাইটে যাওয়ার কাহিনী
সকালে সবাই বের হলো সাইটে। হেলমেট পরে রোদ্দুরে হাঁটছে। কামাল হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
—“আমাদের গ্রামে যদি এত রোদ থাকতো, ধান শুকিয়ে তিন দিনে চাল হয়ে যেত।”
মোশারফ ভাই বলল,
—“এখানে তো ধান শুকায় না, এখানে শুকায় মানুষ।”
সাইটে পৌঁছে কাজ শুরু হলো। কামালের হাতে দিলো সিমেন্ট তোলার কাজ। কিন্তু সে ভুল করে সিমেন্টের বস্তা উল্টে ফেললো। পুরো শরীর ধূসর হয়ে গেলো। সুপারভাইজার এসে বলল,
—“What are you doing?”
কামাল উত্তর দিলো—
—“Sir, আমি আসলে নতুন স্ট্যাচু বানাচ্ছি।”
দুপুরের বিরতি
সবাই বসে চা খাচ্ছে। একজন বলল,
—“এই চা খেলে মনে হয় জিহ্বায় চিনি লেগে গেছে।”
কামাল চুমুক দিয়ে বলল,
—“ভাই, এই চা খেলে দাঁতের ডাক্তারকে ছুটি দিতে হবে।”
হাসির রোল পড়ে গেলো।
সন্ধ্যার আড্ডা
কাজ শেষে ক্যাম্পে ফিরলো। ক্লান্ত সবাই খাটে বসে গল্প করছে। মোশারফ ভাই বলল,
—“আমাদের দেশে এখন ক্রিকেট খেলা চলছে। এখানে খাট দিয়ে ফুটবল খেলি?”
তারা খাট টেনে সত্যি সত্যি ফুটবল খেলতে লাগল। বলের জায়গায় ব্যবহার করলো খালি পানির বোতল।
ফোনে পরিবারের কথা
কামাল রাতে ফোন দিলো মাকে।
—“মা, আমি ভালো আছি।”
—“বাবা, কেমন কাটছে?”
—“মা, সারাদিন রোদে গরম হয়ে যাই, রাতে খাটে বসে হেসে কুলাতে পারি না।”
মা বলল,
—“তুই হাসিস, কিন্তু খেয়াল রাখিস।”
শেষ দৃশ্য
কামাল বুঝলো, জীবন যতই কঠিন হোক, রম্যভাবেই সেটা পার করতে হয়। তার আকাশছোঁয়া স্বপ্নের পথে প্রতিদিনই আছে নতুন হাস্যকর অধ্যায়।
চলবে…