গ্রামের বাজারে একদিন: হালিম, হাঁস আর হুলুস্থুল কাণ্ড

0

 

শুক্রবার সকাল। গ্রামের হাট বসেছে। আমি আর আমার বন্ধু কাদির ঠিক করলাম বাজারে গিয়ে হাঁস কিনবো। হাঁস দিয়ে ঝোল হবে, ভাতের সাথে জমিয়ে খাওয়া যাবে।

কাদির হাঁটতে হাঁটতে বলল,
— “শোন, আজ হাঁসটা আমিই বাছাই করব। তুই তো গরুর মতো হাঁস কিনিস।”
আমি হেসে বললাম,
— “তা হলে তুই হাঁস কিন, আমি হালিম খাব।”

বাজারে ঢুকতেই কানে ভেসে এলো বিক্রেতাদের হাঁকডাক—
“তাজা মাছ! তাজা মাছ!”
“দেশি মুরগি! দেশি হাঁস!”
“চাল-ডাল, সবই সস্তা!”

আমরা হাঁসের দোকানে গিয়ে দাঁড়ালাম। দোকানি দাড়িওয়ালা ভদ্রলোক, হাতে একটা লম্বা জাল। কাদির গম্ভীর হয়ে বলল,
— “ভাই, হাঁসটা ভালো তো? যেন অসুস্থ না হয়।”
দোকানি হাঁসের গলা ধরে বলল,
— “ভাই, এই হাঁস এত স্বাস্থ্যবান যে ইচ্ছা করলে আপনার সাথে ফুটবল খেলতে পারবে।”

আমরা হাঁসটা কিনে ঝোল খাওয়ার স্বপ্নে ডুব দিয়েছি, এমন সময় বাজারের পাশে হালিমের দোকান থেকে সুবাস এলো। হালিমের গন্ধে মাথা ঘুরে গেল। আমি বললাম,
— “দোস্ত, হাঁস পরে হবে, আগে হালিম খাই।”

হালিম খেতে বসে দেখি এক লোক হঠাৎ উঠে চিৎকার করছে,
— “ভাই, আমার হাঁস কে চুরি করল? হাঁসটা আমি বাঁধা দিয়েছিলাম!”
চারপাশে হুলুস্থুল পড়ে গেল। হালিম খেতে খেতে আমরা দেখলাম, ঠিক আমাদের হাঁসের মতোই একটা হাঁস উধাও হয়ে গেছে।

কাদির ভয়ে হাঁসের ঝুঁড়ি আঁকড়ে ধরে বলল,
— “দোস্ত, এরা যদি ভাবে হাঁসটা আমাদের, তখন কী হবে?”
আমি হেসে বললাম,
— “চিন্তা করিস না, বলবি হাঁসটা আমাদের সাথে হালিম খেতে এসেছিল।”

শেষমেশ লোকটার হাঁস পাশের দোকানে পাওয়া গেল। কিন্তু ততক্ষণে পুরো বাজারের মানুষ একসাথে মজা নিচ্ছে। একজন বলল,
— “এই বাজারে হাঁসেরও স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়েছে।”

আমরা হাঁস নিয়ে বাড়ি ফিরলাম, কিন্তু বাজারের হুলুস্থুল কাণ্ড এখনো মনে হলে হাসি আটকাতে পারি না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Out
Ok, Go it!