প্রবাসে যারা থাকে, তারা জানে কাপড় ধোয়া কত বড় ঝামেলা। কেউ মেশিনে ফেলে ভুলে যায়, কেউ আবার রঙ মিশিয়ে এমন কাণ্ড করে বসে যে জামা কাপড়ের রঙ পাল্টে যায়।
একদিন আমি আর রুমমেট মাসুম গেলাম লন্ড্রির দোকানে। দোকানি এক চশমাওয়ালা বিদেশি ভদ্রলোক, সবসময় খুব সিরিয়াস।
মাসুম গিয়ে বলল,
— “ব্রাদার, আমার কাপড়গুলো একটু ভালোভাবে ওয়াশ করবেন।”
লোকটা ঠান্ডা গলায় উত্তর দিল,
— “ভাই, এখানে সবাইকেই ভালোভাবে ওয়াশ করা হয়।”
কথা শেষ হতেই দেখি মাসুম ভুল করে নিজের ব্যাগের বদলে আমার ব্যাগ এগিয়ে দিয়েছে। আমার ব্যাগে তো জামা ছিল, কিন্তু ছিলো এক জোড়া ময়লা মোজা আর একটা ছেঁড়া গেঞ্জি। লোকটা যখন মোজার দিকে তাকাল, মুখে অদ্ভুত এক হাসি এলো।
আরেকজন প্রবাসী ভাই এসেছেন লন্ড্রিতে। তিনি ভুলে সাদা পাঞ্জাবি লাল কাপড়ের সাথে দিয়ে দিয়েছেন। ধোয়া শেষে পাঞ্জাবি হয়ে গেছে গোলাপি। তিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলছেন,
— “হায় আল্লাহ, আমার ঈদের জামাটা তো এখন বিয়ের পর্দা হয়ে গেলো।”
এদিকে দোকানে থাকা এক ফিলিপিনো ভদ্রমহিলা কাপড় নিতে গিয়ে হঠাৎ মজার কাণ্ড ঘটালেন। ব্যাগ খুলে দেখলেন, ভেতরে শুধু অন্তর্বাস! তিনি চিৎকার করে বললেন,
— “এই ব্যাগ আমার না!”
সবাই হেসে লুটোপুটি খেতে লাগলো।
আমি মাসুমকে বললাম,
— “দোস্ত, যদি কখনো প্রেমিকা হয়, মনে রাখিস— তার জামা আর আমার মোজা একই ওয়াশিং মেশিনে যেন না পড়ে।”
মাসুম হেসে বলল,
— “তুই নিশ্চিন্ত থাক, তোর মোজা আলাদা ইতিহাস লিখে ফেলবে।”
লন্ড্রির দোকান থেকে বেরিয়ে মনে হলো, প্রবাস জীবন কষ্টের হলেও এইসব ছোট ছোট কাণ্ডই আমাদের হাসির খোরাক জোগায়।
