গল্পের শুরু ঢাকার এক অদ্ভুত মহল্লা থেকে। এখানে প্রতিটি ঘটনা নাটকের মতো। সেখানকার সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো— কানার বিয়ে।
কানা বলতে আমরা বোঝাই সেই লোককে যে একচোখা। আমাদের গল্পের কানার নাম রহিম কানা। গ্রামে সে নামডাক কুড়িয়েছে শুধু একটি কারণে— তার চোখে না থাকলেও মুখে আছে অবিশ্বাস্য বুদ্ধি, আর খেতে পারে যেন পেটই নেই।
বিয়ের ঘোষণা
গ্রামের মোড়ে একদিন হঠাৎ ঘোষণা হলো—
— “শুনেন শুনেন, রহিম কানার বিয়ে ঠিক হইছে!”
সবাই অবাক। একজন বলল—
— “এ কানা আবার বিয়া করছে? মেয়েটা কি অন্ধ নাকি?”
আরেকজন উত্তর দিল—
— “না রে, মেয়েটা ভালোই, তবে শুনছি ঝোল খাওয়ার শখ আছে।”
পাত্র-পক্ষের প্রস্তুতি
বিয়ের দিন আসছে, গ্রামের সবাই ব্যস্ত। রহিম কানা শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে প্রথমেই ঘোষণা দিল—
— “আমি ভাত কম খাব, তবে মুরগির ঝোল এক হাঁড়ি চাই।”
শ্বশুর হেসে বললেন—
— “আরে বাপু, এত খাইলে তো মুরগিরাই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।”
বিয়ের দিন
বিয়ের দিনে প্যান্ডেলে মজার কাণ্ড ঘটলো। কানার মাথায় পাগড়ি দিয়ে বসানো হলো ঘোড়ার পিঠে। সে চিৎকার দিয়ে বলল—
— “ওরে বাবা, ঘোড়া দৌড়াইতেছে, আমি পড়ে যাইতেছি!”
লোকজন ঘোড়া ধরে থামালো।
প্যান্ডেলে পৌঁছানোর পর খাবারের আয়োজন শুরু হলো। এক হাঁড়ি মুরগির ঝোল এল। রহিম কানা হাঁড়ি হাতে নিয়ে বলল—
— “এটা আমার ব্যক্তিগত। কেউ ভাগ বসাইলে চোখ দিয়েই কামড় বসামু।”
খাবারের লড়াই
খাবার শুরু হতেই কানার সামনে ভাতের পাহাড়। সে একাই হাঁড়ি ভর্তি ঝোল খেয়ে ফেলল। অতিথিরা বলছে—
— “আরে বাবা, বিয়েতে এ কেমন বর! খাইতে খাইতেই বউ ভুলে গেল।”
বউ meantime চুপচাপ বসে আছে। কেউ জিজ্ঞেস করল—
— “বউমা, তুমি খাচ্ছ না কেন?”
বউ উত্তর দিলো—
— “আমি ভেবেছিলাম আমার বর একটু খাইয়ে দিবে, কিন্তু উনি তো হাঁড়ি নিয়াই পালাইছে।”
রাতের ঘটনা
বিয়ের রাতে বউ কাঁদতে কাঁদতে বললো—
— “তুমি আমাকে ভালোবাসো না?”
কানা রহিম হাঁসি দিয়ে বলল—
— “তোরে আমি ভাতের মতো ভালোবাসি, কিন্তু মুরগির ঝোল ছাড়া ভাত গলায় নামতে চায় না।”
বউ রাগ করে বললো—
— “তাহলে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে মুরগির সাথে বিয়ে করো।”
গ্রামে পরদিন সকালেই খবর ছড়িয়ে গেল—
“কানা রহিম বউয়েরে ভুলে হাঁড়ির প্রেমে পড়েছে।”